এক বছর পর্যন্ত নবজাতকের স্বাদে যেসব পরিবর্তন আসে

নবজাতক শিশুর যত্ন অনেক বেশি জরুরি। শিশুর প্রতিপালন যেভাবে হয়, তার উপর তার সমগ্র জীবন নির্ভর করে। ছোট থেকে বড়, সব জিনিস এর সঙ্গে সম্পর্কিত। শিশুর জন্ম থেকে ৫ বছর বয়স অবধি নানারকম বৃদ্ধি ঘটতে থাকে। এই বাড়ন্ত বয়সে শিশুর শরীরে নানাবিধ পুষ্টি দরকার, যা আসবে বিভিন্ন ধরনের গৃহীত খাদ্য থেকে।

গর্ভাবস্থাতেই শিশুদের মধ্যে স্বাদজ্ঞান চলে আসে। গর্ভধারণের ৯ সপ্তাহ পর থেকেই অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের কারণে মায়ের খাওয়া খাবারের স্বাদ শিশুরা পায়। মুখ এবং জিহ্বা তৈরি হতে সেই ক্ষমতা আরও তীব্র হতে থাকে। তাই জন্মের সময় প্রখর স্বাদ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে নবজাতক। সেজন্য প্রথমেই জন্মের পর মিষ্টি স্বাদের অনুভূতি এবং পুষ্টির জন্য শালদুধ খাওয়াকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।

শিশুর খাদ্য / ছবি: সংগৃহীত


নবজাতক থেকে ৩ মাস: এই পর্যায়ে, আপনার শিশুর স্বাদ অনুভূতি খুবই সংবেদনশীল। প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুর স্বাদ অনুভব করার অভিজ্ঞতা এই বয়সে একেবারেই ভিন্ন। শুধু জিহ্বায় নয়, নবজাতক টনসিল সহ মুখের অন্যান্য জায়গায়ও স্বাদগ্রহণ করতে পারে। মিষ্টি এবং তেতো স্বাদের পার্থক্যজ্ঞান এই বয়সেই প্রখর থাকে।

৩ মাস থেকে ৬ মাস: এই বয়সে শিশুর জিহ্বা শরীরের সঙ্গে আকারে কিছুটা বাড়ে। এই বয়সে শিশুদের দেখা যায়, বিভিন্ন জিনিস মুখে দিচ্ছে। কাপড়, খেলনা বা হাতের কাছে যা পায় তাই মুখে দিতে শুরু করে। এটা আসলে একটি ভালো অভ্যাস, এভাবে তারা বুনট ও স্বাদ বোঝার চেষ্টা করে। তবে অবশ্যই শিশুর যেন কোনো ক্ষতি বা অসুবিধা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

শিশুর খাদ্য / ছবি: সংগৃহীত


৬  মাস থেকে ১ বছর: ৭-৮ মাস বয়সেই শিশুরা নিজের হাতে খাবার খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। শিশুকে বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে পরিচয় করানোর জন্য এইসময়টাই মোক্ষম। ৬ মাস বয়সের পর শিশুকে শক্ত খাবার খাওয়ানো শুরু করা হয়। এইসময় শিশুকে সব ধরনের খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে হয়। প্রথমেই চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ানো যাবে না। কারণ এমনিতেই মায়ের বুকের দুধ কিছুটা মিষ্টি স্বাদের হওয়ায় নবজাতকের মিষ্টির প্রতি ঝোঁক তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

শিশুকে টক, তেঁতো, হালকা আঁশজাতীয় সবরকম খাবারই খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। যত বেশি ধরনের খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলবেন শিশুর পুষ্টির ভারসাম্য তত বেশি হবে। চেষ্টা করুন ফল-সবজি থেকে শুরু করে মাছ-মাংস সবই যতটা সম্ভব তাজা খাওয়ানোর। তবে বেশি তেল মশলা বা ভারি খাবার খাওয়াবেন না। শিশুর হজম ক্ষমতা বেশি পরপক্ক না হওয়ায় অবশ্যই কোনো খাবারে শিশুর সমস্যা হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখবেন। চেষ্টা করবেন প্রতিটা খাবার আলাদা আলাদাভাবে খাওয়াতে, এতে শিশুর কোনো খাবারে এলার্জি আছে কিনা তা যাচাই করা সহজ হয়।

শিশুর খাদ্য / ছবি: সংগৃহীত

তথ্যসূত্র: বেবিসেন্টার

Related Posts

en_GB