এতে মূল্যস্ফীতির বাজারে এসব পণ্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছে ভোক্তারা। তারা বলছে, বাজারে সরকারের কড়া নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
গত ২১ আগস্ট বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা।
বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. বিন ইয়ামিন মোল্লা সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়ে (আলটিমেটাম) বলেছিলেন, সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ১২০ টাকা, চিনি প্রতি কেজি ৯০ টাকা ও আলু প্রতি কেজি ২৫ টাকা করতে হবে। বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই আলটিমেটাম দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মো. বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য কমানোর আলটিমেটামের সঙ্গে আমাদের দাবি ছিল, যারা গত স্বৈরাচার সরকারের দোসর, তাদের পদত্যাগ করতে হবে। এরপর প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী তাঁর পদে নেই।
তিনি বলেন, ‘নতুন সরকার আসার প্রায় দুই মাস হলো, কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের প্রধান যে দরকার ছিল, দ্রব্যমূল্য কমানো, এই জায়গায় কিন্তু উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনই আসেনি। তাহলে মানুষ যে এত জীবন দিল, রক্ত দিল, তাদের প্রত্যাশা পূরণ হলো কিভাবে? কোনো ফল আসছে না।’
রাজধানীর গুলশান-২ এলাকার কালাচাঁদপুর বউ বাজারে আসেন বেসরকারি চাকরিজীবী মামুন আহমেদ। তাঁর কাছে পণ্যের দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, সাদা আলু ৬৫ টাকা কেজি। এত দাম তো হওয়ার কথা নয়। আগে এই আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে ছিল। কিন্তু এখন দ্বিগুণের বেশি। এমন নয় যে বাজারে আলু নেই, ঘাটতি রয়েছে। আলু আছে, কিন্তু দাম বেশি। এটা তো হতে পারে না। এখনই সরকারকে এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
ভোক্তাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথম দুই সপ্তাহ নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা কমিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সময় পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নিজেদের রং পরিবর্তন করে আগের মতোই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, বাজারে সিন্ডিকেট চলমান। ব্যবসায়ীরা এখন নতুন রূপে আসছেন। ৫ আগস্টের পর দুই সপ্তাহের মতো পণ্যের দাম কিছুটা কম ছিল। এরপর ব্যবসায়ীরা বুঝে গেলেন, বর্তমান সরকারও ব্যবসায়ীদের বিষয়ে তেমন কিছু করবে না। এ কারণে তাঁরা তাঁদের কার্যক্রম আগের মতোই রেখেছেন।
আমদানিকারকরা চিনির দাম সম্পর্কে বলছেন, প্রতি কেজি চিনিতে সব ধরনের ভ্যাট-ট্যাক্সসহ সরকারকে দিতে হয় ৪০ থেকে ৪২ টাকা। এতে আমদানি করা চিনির দাম বেড়ে যায়। অন্যদিকে ভারত থেকে চোরাই পথে চিনি আসার কারণে তাঁরা চাপে পড়ছেন। ফলে কমছে না চিনির দাম।