পুরুষ মানুষের মধ্যে যে ধরনের ক্যানসার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, এর মধ্যে একটি হচ্ছে— প্রোস্টেট ক্যানসার। এই ক্যানসারের কোষগুলো প্রোস্টেট গ্রন্থিতে বিকশিত হয়। প্রোস্টেট হচ্ছে মূত্রাশয়ের নিচে অবস্থিত একটি ছোট্ট গ্রন্থি। সাধারণত বয়স্ক পুরুষ মানুষের মধ্যে এ গ্রন্থির ক্যানসার বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে বয়স ৫০ পেরিয়ে গেলে, তখন এ রোগের ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। জেনেটিকস, বয়স ও জীবনধারা বহুলাংশে এ ক্যানসারের নেপথ্যে মূল কারণ। তবে খাদ্যও প্রোস্টেট ক্যানসারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এমন কিছু খাবার আছে, যা প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এ রকম চারটি খাবার রয়েছে, যেগুলো প্রোস্টেট ক্যানসারের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি আছে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন খাবারগুলো একজন পুরুষের প্রোস্টেট ক্যানসারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
মদপান
আপনি যদি অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করে থাকেন, তাহলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাবে এবং আপনি প্রোস্টেট ক্যানসারসহ বিভিন্ন ক্যানসারের ঝুঁকিতে পড়বেন। অ্যালকোহল হরমোনের মাত্রাকেও প্রভাবিত করতে পারে এবং প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যা প্রোস্টেটের ভীষণ ক্ষতি করতে পারে।
ট্রান্স ফ্যাট
ট্রান্স ফ্যাট সম্পর্কে চিকিৎসকরা বলছেন, প্রায়শই বেকড পণ্য, ভাজা খাবার এবং প্যাকেটজাত স্ন্যাকসে ট্রান্স ফ্যাট থাকে। এই অস্বাস্থ্যকর চর্বি প্রদাহ বাড়াতে পারে এবং প্রোস্টেট ক্যানসার কোষের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে পারে। কাজেই এজাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে।
দুগ্ধজাত পণ্য
আপনি সবসময় দুগ্ধজাত পণ্য খাবার এড়িয়ে চলুন। কারণ ফুল ফ্যাট দুধ, পনির, মাখন, ক্রিম ও দইয়ে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং হরমোন থাকে, যা প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সম্প্রতি গবেষণা অনুযায়ী দেখা গেছে, প্রচুর পরিমাণে ফুল ফ্যাট দুধ ও উচ্চ চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করলে আক্রমণাত্মক প্রোস্টেট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।
রেড মিট
প্রোস্টেট ক্যানসারের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি থাকে গরু ও শুয়োরের মাংসে। কারণ গরুর মাংস ও শুয়োরের মাংস ছাড়াও ভেড়ার মাংসের সসেজ ও হট ডগ প্রক্রিয়াজাত খাবার প্রোস্টেট ক্যানসারের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণা অনুসারে, প্রচুর পরিমাণে লাল ও প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়া, বিশেষ করে উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করা লাল মাংস প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। এর কারণ উচ্চ তাপে মাংস রান্না করলে হেটেরোসাইক্লিক অ্যামাইনস নামক ক্ষতিকর রাসায়নিক তৈরি হয়, যা কোষের ক্ষতি করতে পারে এবং ক্যানসার ডেকে আনতে পারে।